মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০১১

................আষাঢ় এসেছে...................

খুব ভালবাসি এই বর্ষা সময়টিকে আমারi

বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল
করেছ দান
আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান

মেঘের ছায়ায় অন্ধকারে
...রেখেছে ঢেকে তারে
এই যে আমার সুরের ক্ষেতের ও প্রথম সোনার ধান

আজ এনে দিলে
হয়তো দেবে না কাল
রিক্ত হবে যে তোমার ফুলের ডাল
এ গান আমার
শ্রাবনে শ্রাবনে তব বিস্মৃতি স্রোতের প্লাবনে
ফিরিয়া ফিরিয়া আসিবে তরণী বহি তব সম্মান।



কিছুদিন থেকেই বজ্র-বিদ্যুৎসহ প্রকৃতির দরজায় কড়া নাড়ছিল বর্ষাকাল। আজ সেই দরজা খুলে গেছে।আজ থেকে সব রুক্ষতাকে বিদায় জানিয়ে নরম কোমল উর্বর হয়ে উঠবে বাংলার মাটি। নতুন প্রাণের আনন্দে অঙ্কুরিত হবে গাছপালা, ফসলের মাঠ। মাঠে মাঠে ফুটে উঠবে কৃষকের হাসি। আর সে হাসির প্রতিফলন দেখা যাবে স্নিগ্ধ সজীব প্রকৃতিতে। বৃষ্টির রিমঝিম ধ্বনিতে পেখম মেলবে ময়ূর।


আষাঢ়ে বৃষ্টির কতো বিচিত্র কীর্তি! জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সে একই সঙ্গে ভিজিয়ে দেয়। কখনো সে কর্মব্যস্ত নাগরিক জীবনকে দস্যু দলের মতো হঠাৎ ছত্রভঙ্গ করে দেয়, আবার কখনো একই আশ্রয়স্থলের নিচে একত্র করে বিচ্ছিন্ন মানুষগুলোকে। কখনো সে ঘরছাড়ার হাতছানি, কখনো বা ঘরে ফেরার হয়রানি।


বাইরের ঝুম বৃষ্টি ঘরে ঘরে জমিয়ে তুলবে আষাঢ়ে গল্প। অনুষঙ্গ হিসেবে থাকবে মুড়ি-চানাচুর-বাদাম ভাজা। হয়তো গল্পের ফাঁকে ফাঁকে উদাসীন হয়ে পড়বে কেউ কেউ। কারো বা মনে হবে ‘এমন দিনেই তারে বলা যায়’, কিন্তু কী বলা যায়, তা বুঝতে না পেরে বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল হাতে দাঁড়িয়ে থাকবে বৃষ্টিতে।


আমাদের ক্লান্ত তপ্ত জীবনের ওপর আশীর্বাদের মতো ঝরে পড়ুক বৃষ্টিধারা। বৃষ্টিতে বৃষ্টিতে রচিত হোক বর্ষামঙ্গল। নতুন প্রেরণায়, প্রাণের উচ্ছ্বাসে জেগে উঠুক বাংলাদেশের প্রকৃতি ও মানুষ। প্রাণে প্রাণে বেজে চলুক বর্ষার গান। মেঘের সঙ্গী হয়ে আমাদের মন ঘুরে বেড়াক দিকদিগন্তে, দূর থেকে দূরে, আরো দূরে।


বৃষ্টির সম্ভাবনা বুকে নিয়ে আকাশে ঘুরঘুর করতে থাকা মেঘ, বন ও জনপদসহ চারদিক ঝাপসা করে ঝেঁপে আসা বৃষ্টি আর তারই আবহে অবিরাম বেজে চলা ব্যাঙ-দম্পতির প্রেমময় ধ্রুপদী সঙ্গীত আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেবে ‘আষাঢ় আসিয়াছে’।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন